খাবারের দাওয়াত না দেওয়ায় এক শিক্ষককে লাথি ও কিল-ঘুষি মারার ঘটনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ (শরীয়তপুর) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল জমাদ্দারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানায় মামলাটি করেন।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আক্তার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ ও রাসেলসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বুধবার (৩০ মার্চ) কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক সম্মান (অনার্স) চতুর্থ বর্ষের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা শেষে বিভাগের পক্ষ থেকে খাবারের আয়োজন করা হয়। বিকেল ৪টার দিকে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীকে নিয়ে বাংলা বিভাগে আসেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ব্যাপারী ও সাধারণ সম্পাদক রাশেল জমাদ্দার। খাবারের আয়োজনে কেন ছাত্রলীগ নেতাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি তারা জানতে চান। তারা বাংলা বিভাগের প্রভাষক বিএম সোহেলকে এ বিষয়ে জবাবদিহি করতে বলেন।
শিক্ষক সোহেল বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন ছাত্রলীগ নেতাদের। এ নিয়ে সোহেলের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাদের বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তারা শিক্ষক সোহেলকে লাথি, কিল ও ঘুষি মেরে আহত করেন। পরে অন্য শিক্ষকরা এসে সোহেলকে উদ্ধার করেন।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিতে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাসহ পাঁচ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সংহতি সমাবেশ করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।
এরআগে এ ঘটনায় সকালে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. মহসিন মাদবর ও যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ উজ্জামান রাশেদ সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করার কথা জানানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :