মু. জিল্লুর রহমান জুয়েল, পটুয়াখালীঃ
দেশের খাদ্যের সরবরাহ ও পুষ্টি যোগানো একটি গুরুত্বপূর্ণ রবিমৌসুম। কৃষকের কষ্টার্জিত রবিশস্য দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানিতে বাংলাদেশের বেশ স্বনামের সাথে এগিয়ে চলছিলো। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্যোগ পূর্ণ আবহাওয়া আর ঘূর্ণিঝড় অশনির কবলে এবার রবিশস্যের বাম্পার ফলন।
পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছরের মতো এবারও রবিশস্য বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের ঘরে উঠাতে পারেনি বলে কৃষকদের কাছ থেকে জানা যায়।
সজমিনে গলাচিপা, দশমিনা ও রাঙ্গাবালী উপ-জেলার মুগ ডাল চাষিরা দিশেহারা হয়ে পরছে। দেশের চলমান বৈরী আবহাওয়া আর ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে মুগ ডাল, চিনা বাদাম, মাশকলাই, মরিচসহ অধিকাংশ আবাদী জমির ফলন পনিতে তলিয়ে এবং অর্ধ ডুবন্ত অবস্থা দেখা যায়। চিকনিকান্দী ইউনিয়নের মুগ ডাল চাষি মোঃ মনির জমাদ্দার, হাসেম ঘোরামি, ইদ্রিস প্যাদা, মোঃ আমির হোসেন প্যাদা মোঃ হানিফ প্যাদা ও মোঃ ইউনুচ মিয়া এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ হুমায়ুন কবির, গলাচিপা সদর ইউনিয়নের অটল চন্দ্র পাল, মোঃ ফরহাদ হোসেন বাবুল বলেন, নিয়মানুযায়ী প্রতিবছরই সময় মতো বাদাম, মরিচ ও মুগ ডাল পাকাঁ শুরুতেই ঘরে তুলতে পেরেছি। কিন্তু এবছর দিনমজুরি না পাওয়ায় আর বন্যার কারনে তা আর সম্ভব হয়নি, যার ফলে বৃষ্টির পানিতে পাকাঁ মুগ ডাল গুলো ফুলে ফেঁপে ফুটে গেছে, বাদাম ও মরিচ গাছের গোড়ায় পানি জমার কারনে পচনধরে নানান ধরনের পোকামাকড় আক্রমণ করে নষ্ট করে ফেলে, যা ব্যাবহার অনুপযোগী হয়ে পরছে। যা খাওয়া বা বাজারজাত করা কোন মতেই সম্ভব নয়। যার ফলে লাখ লাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরেছি। গলাচিপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজু আক্তার গণমাধ্যমকে জানান, এবছর মোট ১৫ হাজার ৫’শত হেক্টর জমিতে রবিশস্যে মুগ ডাল, বাদাম, মরিচ চাষাবাদ হয়েছে। বর্তমান বৈরী আবহাওয়া বন্যা ও বৃষ্টির কারণে ৫০ ভাগ ফলন উত্তল হয়েছে। তবে আবহাওয়ার কোন পরিবর্ত না হলে মুগ ডাল চাষিদের ক্ষতির সংকা রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষতির পরিমান অনুুসন্ধান ও প্রান্তিক চাষিদের খোজঁ খবর রাখা হচ্ছেে।
এদিকে রাঙ্গাবালী উপজেলায় বৃষ্টির কারনে ক্ষতির সংঙ্খা করছেন মুগ ডাল চাষিরা। বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাঙ্গাবালী কৃষি অফিস থেকে জানা যায় ২০২২ইং অর্থ বছরে মুগ ডালসহ রবিশস্য আবাদ ১২ হাজার ৯ শত ৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে, এর মধ্যে ৩৮৮৫ হেক্টর চিনাবাদাম আবাদ ১৫২০ হেক্টর মাঠে আছে ১৫২০ হেক্টর, মরিচ আবাদ ১৫৮০ হেক্টর, মাঠে আছে ৭১১ হেক্টর, মিষ্টি আলু আবাদ ২১০ হেক্টর, মাঠে আছে ১০৫ হেক্টর, ফেলন আবাদ ১২৫৫ হেক্টর মাঠে আছে ১৮৮ হেক্টর। সূত্রে আরও জানা জায় গতবছরের চেয়েও চলতি বছরের রবিশস্যের বাম্পার ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু আকর্ষিক বন্যা ও বৃষ্টির কারনে এবছর মুগ ডাল, মুশুরী ডাল, মরিচ বাদাম চাষাবাদ জমিতে পানিতে তলিয়ে রয়েছে। যার ফলে নির্দিষ্ট ক্ষতির পরিমান করা যাচ্ছে না।তবে পানি সরে গেলে সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা যাবে বলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জুয়েল মুঠোফোনে জানান।
আপনার মতামত লিখুন :