ব্রিজ নির্মাণে ধীরগতি: দ্রুত কাজ শেষের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

- আপডেট সময় : ০৯:১৩:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫ ২২ বার পড়া হয়েছে

ব্রিজ নির্মাণে ধীরগতি: দ্রুত কাজ শেষের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
মিঠুন পাল, পটুয়াখালী থেকে।
গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া-গজালিয়া ইউনিয়নের সংযোগ খালের ওপর নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও ব্রিজ নির্মাণে অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয়রা। এরই প্রতিবাদে ও দ্রুত কাজ সম্পন্নের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
রোববার (৪ মে) সকাল ১০টায় ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন শতাধিক স্থানীয় মানুষ। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বাসিন্দা শামীম খা (৪০), শাহাবুদ্দিন প্যাদা (৬০) ও শাহীন ঢালী (৪০)।
বক্তারা বলেন, এই ব্রিজটি শুধু গজালিয়ার জন্য নয়, আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের প্রধান পথ। বছরের পর বছর পার হলেও কাজ শেষ না হওয়ায় শিক্ষার্থী, রোগী ও সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের পাটাতন দিয়ে এখনো চলাচল করতে হচ্ছে। উপজেলা শহরে যেতে হচ্ছে চিকনিকান্দি বাজার হয়ে, যা অত্যন্ত কষ্টকর।
তারা আরও জানান, ব্রিজের দুই পাড়ে রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির ও হাটবাজার। ফলে এর নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ হওয়া জরুরি। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দ্রুত ব্রিজের কাজ সম্পন্নের আহ্বান জানান এবং কাজের তদারকি জোরদার করার দাবি জানান।
জানা গেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আয়রন ব্রিজ পুনঃনির্মাণ/পুনর্বাসন প্রকল্প (টিবিআরপি)-এর আওতায় ২০২৩ সালের ১ মে গলাচিপা উপজেলার আটখালী-চন্দ্রাইল সড়কে ২৪৩০ মিটার, চেইনেজে ৭২ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। চুক্তিমূল্য ৫ কোটি ৯১ লাখ ২৪ হাজার ১৬৫ টাকা। বরিশালের বাকেরগঞ্জের মেসার্স হাজী এন্টারপ্রাইজ এই কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং বাস্তবায়নে রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজ শেষ হয়নি। বর্তমানে ব্রিজের নির্মাণকাজ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে।
চর চন্দ্রাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সুবর্ণা রাণী বলেন, প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ পার হয়ে যেতে হয়। বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়। দ্রুত কাজ সম্পন্ন না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে মেসার্স হাজী এন্টারপ্রাইজ-এর ঠিকাদার কবির হোসেন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি সাংবাদিকদের উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। তার দাবি, ব্রিজের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ব্রিজটির উচ্চতা পরিবর্তনের কারণে নতুন ডিজাইন পাস করতে সময় লেগেছে। বর্তমানে নতুন ডিজাইন অনুমোদিত হয়েছে। খুব দ্রুতই নির্মাণকাজ শুরু হবে। তিনি আরও জানান, আপাতত পুরাতন ব্রিজটি চলাচলের উপযোগী করে তোলার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।