ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ঠান্ডায় প্রাণ হারানো যুবকের লাশ মাদারীপুরে নিজ বাড়িতে দাফন - সময়কাল

ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ঠান্ডায় প্রাণ হারানো যুবকের লাশ মাদারীপুরে নিজ বাড়িতে দাফন


admin-abbas প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২, ৫:৫০ অপরাহ্ণ / ১৬
ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ঠান্ডায় প্রাণ হারানো যুবকের লাশ মাদারীপুরে নিজ বাড়িতে দাফন

নাইম হাওলাদার:অবৈধভাবে ইতালী যাওয়ার সময় ঝড়োবাতাসে প্রচন্ড ঠান্ডায় তিউনিউসিয়ার
ভুমধ্যসাগরে প্রাণ হারায় বাংলাদেশের সাত যুবক। ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস
থেকে ২৯ জানুয়ারী এক অতি জরুরী নোটিশের মাধ্যমে সাত জনের নাম জানা
যায়। ৭ যুবকের মধ্যে পাঁচজনের বাড়ি মাদারীপুরে। নিহত পাঁচজনের মধ্যে ১ জন
মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম পেয়ারপুর গ্রামের শাজাহান
হাওলাদারের ছেলে ইমরান। শুক্রবার রাতে লাশ নিহতের বাড়িতে পৌছায়। শনিবার সকালে
নিজ বাড়ীতে দাফন করা হয় ইমরানের লাশ। নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
দালালের শাস্তিসহ অসহায় পরিবারের পাশে দাড়াবে সরকার এমনটাই দাবি স্বজন ও
¯’ানীয়দের।
জানা যায়, অবৈধভাবে ইতালী যাওয়ার সময় ঝড়োবাতাসে প্রচন্ড ঠান্ডায়
তিউনিউসিয়ার ভুমধ্যসাগরে প্রাণ হারানো বাংলাদেশের সাত যুবকের নাম ২৯
জানুয়ারী এক জরুরী নোটিশের মাধ্যমে জানায় ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস । ৭
যুবকের মধ্যে পাঁচজনের বাড়ি মাদারীপুরে। নিহত হলো,মাদারীপুর সদর উপজেলার
পেয়ারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম পেয়ারপুর গ্রামের শাজাহান হাওলাদারের ছেলে ইমরান
হোসেন, মস্তফাপুর ইউনিয়নের চতুরপাড় গ্রামের শাহাজালাল এর ছেলে জহিরুল,
ইশিবপুর এলাকার কাশেম মোল্লার ছেলে সাফায়েত, পেয়ারপুর ইউনিয়নের
বড়াইলবাড়ি গ্রামের প্রেমানন্দ তালুকদারের ছেলে জয় তালুকদার রতন ও সদর উপজেলার
বাপ্পী নামে এক যুবক। নিহত ৫ জনের মধ্যে ইমরানের লাশ শুক্রবার ভোর রাতে মাদারীপুরে
তার নিজ বাড়িতে পৌছায় । শনিবার সকালে পারিবারিক কবর¯’ানে দাফন করা হয়
ইমরানের লাশ। পরিবারে চলছে শোকের মাতম। শাজাহান হাওলাদারের একমাত্র ছেলের
ইমরান। তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে ছিল শাজাহান হাওলাদারের সংসার। একমাত্র
ছেলেকে ঝুকি নিয়ে ইতালী পাঠান তিনি । সব স্বপ্ন-আশা ফিরে আসে
কফিনে বন্ধী হয়ে। সেই ছেলে আজ শুয়ে আছে বাড়ির আঙ্গিনায়। এ যেন ভাগ্যের
নির্মম পরিহাস। একটু স”ছলভাবে বেচে থাকার আশায় হারাতে হয়েছে বৃদ্ধ
বয়সের একমাত্র অবলম্বন ছেলে ইমরানকে। সব শান্তনাই তার কাছে আজ মিথ্যে বলে
মনে হয়। তবুুও সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন লাশ দেশে এনে দেয়ার জন্য।
তবে দালালের শাস্তি দাবিসহ অসহায় পরিবারের পাশে থাকবে সরকার এমনটা আশা
করে নিহতের পরিবার ও ¯’ানীয়রা।

¯’ানীয় আব্বাস হাওলাদার বলেন, তিনটা মাইয়া আর একটা পোলা আছিল।
পোলাটা মইরা গেল। এ কষ্ট বাবা মা ছাড়া কেউ বোঝবে না। আমরা চাই দালালের
বিচার হোক। শাজাহান ১২ লাখ টাকা দেনা হইছে। কেমনে সেই দেনা শোধ করবে।
সরকার সাহায্য না করলে ভিটা মাটি সবই বেই”চা দেনা দিতে হইবো। একদিকে
পোলার শোক অন্য দিকে দেনার চাপ। আল্লাহ ছাড়া আর কোন রাস্তা নাই।
নিহতের ছোট বোন নাসরিন আহাজারি করে বলেন, ভাই বলে ডাকবো কাকে?
আমার একমাত্র ভাইয়ের কাছে কিছু চাইতাম না বেচে থাকলেনই হতো। আমার
ভাইকে কফিনে পাঠাইলা ক্যান আল্লাহ। ভাই কইছিল বিদেশ গিয়ে টাকা
পাঠাবে,পড়াশোন করতে ,ঘর চালাইতে আর কষ্ট হইবো না। বাবাকেও যেন আর কাজ
করতে না হয়। সেই ভাই ই ফিরে এলো কফিনে। কবর দেখলেই মনে হয় আমরাও কেন
মরলাম না। তিন বোন ছিলাম আল্লাহ আমাদের একজন নিতে পারতা।

নিহতের বাবা শাজহান হাওলাদার বলেন, জেলে যুগ যুগ আটকা থাকলেও বুঝতারম
ছেলে বাইচা আছে। আমার আর কিছুই রইলো না। বিদেশ দিতে চাই নাই। তখন
বলতো বাবা তোমার এখন কাজ করতে কষ্ট হয়। আমি বিদেশ গেলে তোমাকে আর
কাজ করতে দিব না। সারা জীবন কষ্ট করছো,আর কষ্ট করতে দিমু না। আমার বাবা
আমাকে ছেড়ে গেলি ক্যান। আল্লাহ আমাকে নিতে পারলা না? সাংবাদিক আর
সরকারের কারনেই ছেলের মুখ শেষ বারের মতো দেখতে পারছি। আমি দালালের বিচার
চাই। সরকার যেন আমার পাশে থাকে। সরকারের সহযোগীতা চাই।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ইমরান নামে একজনের লাশ
দেশে আসছে। দালালের বিরুদ্ধে মামলা করতে চেয়েছিল নিহতের পবিবার। সরকার
অসহায় পরিবারের পাশে ছিল , পাশে থাকবে। আমরা দালালের বিরুদ্ধে ব্যব¯’া নিব

ব্রেকিং নিউজ