মাদারীপুরে স্ত্রীর নির্যাতনের শিকার স্বামীর সংবাদ সম্মেলন

- আপডেট সময় : ১১:১৫:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪ ১৫২ বার পড়া হয়েছে

মাদারীপুরে স্ত্রীর নির্যাতনের শিকার স্বামীর সংবাদ সম্মেলন
মাদারীপুরে হান্নান শরীফ নামে মসজিদের এক মুয়াজ্জিনকে মাদকাসক্ত বানানোর জন্য নির্যাতন অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী চম্পা বেগমের উপর। সদর উপজেলা পাঁচখোলা ইউনিয়নের মুক্তি সেনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল বিকেলে সংবাদ সম্মেলন মাধ্যমে এই অভিযোগ তুলে ধরেন নির্যাতিত মুয়াজ্জিন হান্নান শরীফ।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত ৮ বছর ধরে হান্নান শরীফ স্থানীয় একটি মসজিদ মুয়াজ্জিনের দ্বায়িত্ব পালন করে আসছে। গত ৩দিন আগে রাত আনুমানিক ২টার দিকে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের মুক্তিসেনা স্কুল সংলগ্ন এলাকা থেকে হান্নান শরীফকে তুলে নিয়ে যায়। তিনি আত্ম চিৎকার দিলেও আশেপাশের ঘরের লোকজন আসার আগেই অজ্ঞাত ব্যাক্তিরা দ্রুত পালিয়ে যায়। এলাকার সকলেই অনেক যায়গায় খোজাখুজি করেও না পেয়ে থানা পুলিশ দ্বারস্থ হন তার সহোদর ভাই। তার স্ত্রীর মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে ফরিদপুরের একটি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে তাকে নেওয়া হয়েছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান স্ত্রী চম্পা বেগমের আবেদনের ভিত্তিতে হান্নান শরীফকে আনা হয়েছে। তবে টেস্ট করে মাদকাসক্ত না হলে ছেড়ে দেবো। পরে রিহ্যাব সেন্টারের লোকজন সদর থানা পুলিশ কাছে মুয়াজ্জিন হান্নানকে নিয়ে আসেন। এভাবেই মৃত্যুর দুয়ার থেকে নতুন জীবন পেয়ে ফিরে আসেন মুয়াজ্জিন হান্নান শরীফ।
স্থানীয়রা জানান, আমরা পুলিশের দ্বারস্থ না হলে হান্নান শরীফকে গুম করে মেরে ফেলতে চেয়েছে ওর স্ত্রী চম্পা । এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্ত মুলুক বিচার চাই।
নির্যাতিত হান্নান শরীফ অভিযোগ করে বলেন, আমি প্রায় ২৫ বছর আগে চম্পা বেগমকে পরিবারের ইচ্ছায় বিয়ে করেছি। তবে শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারিনি। দুই সন্তান হওয়ার পরে থেকেই চম্পা বেপরোয়া হয়ে উঠে, আমি নিষেধ করলেও আমার কথা তোয়াক্কা করতো না। আমি যে তার স্বামী এটা সে কিছু মনে করতো না, বরং আমার উপর মানষিক নির্যাতন চালাতো। আমি লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলতাম না। তার উপর বাংলাদেশের আইন নারীদের পক্ষে। ছেলেদের পক্ষে কোন আইন নেই। চম্পা সেই ভয় দেখাতো আমাকে। এর কিছুদিন চম্পা বেগম আমার বাড়ি থেকে চলে যায়। সব চেষ্টা করেও গেল ১০ বছর পর্যন্ত আমার বাড়িতে এবং আমাকে সব সময়ে মামলা দিয়ে জেল খাটানোর হুমকি দিতো। গত ৩ বছর আগে আমার পরিবারের সবাই মিলে চম্পাকে আমার বাড়ি নিয়ে আসি। বছর খানেক পরে একটি কন্যা সন্তান হয়। এ-র কিছুদিন পরে সে পূনরায় বেপরোয়া হয়ে উঠে। আমি নিষেধ করলে আমি নামে দুটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এক মামলায় ২৬ দিন ওপর মামলায় ২২দিন জেল খেটেছি। এরেই মধ্যে এক মামলা খালাস দিয়েছে আদালত। আর এক মামলা ও খালাসের পথে। তাই চম্পা বেগম আমাকে, মারধর, নির্যাতন এবং সমাজের কাছে আমার সুনাম নষ্ট করার জন্য একটি রিহ্যাব সেন্টারে কাছে আমার স্বামী হান্নান শরীফ মাদকাসক্ত তাকে চিকিৎসা করাতে চাই বলে আবেদন করে। এবং চম্পা বেগম রাতের আঁধারে আমাকে লোকজন দিয়ে ধরে নিয়ে যায়। পরে রিহ্যাবের লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশের মাধ্যমে আমাকে ছেড়ে দেয়। আমি সরকার প্রশাসনের কাছে চম্পা বেগমের সঠিক বিচার চাই।
অভিযুক্ত চম্পা বেগম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। তবে প্রতিবেদকের সাথে কথার একটা পর্যায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হান্নান শরীফকে রিহ্যাবে পাঠানোর কথা স্বীকার করেন। তিনি জেদের বসে এসব করেছেন। তিনি এরকম ঘটনা আর ঘটাবেন না।
মাদারীপুর সদর থানার ওসি মোঃ এএইচএম সালাউদ্দিন জানান, উক্ত বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।