মিঠুন পাল। যুদ্ধে আবেগপ্রবণ অনাকাঙ্ক্ষিত মমত্ববোধ এবং অশ্রুসিক্ত চোখে নারীর বাসনার দৃষ্টি হলে নিশ্চিত পরাজয় অবধারিত। ন্যায় সংগত একটি যুদ্ধের মাধ্যমে সৈনিক তার দেশ প্রেম উজাড় করে স্বীয়শক্তিতে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শত্রুর জাল টুটিয়া বিজয় পতাকা উত্তলন করে । একটি যুদ্ধ, কিছু হারিয়ে বৃহত্তর পাওয়া কে প্রাধান্য দিয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করা হয়। যুদ্ধ পরিকল্পনায় সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে ব্যর্থ হলে অসময়ের গ্লানি থাকে অনির্দিস্টকাল। তাই পরিকল্পনা এবং পরিচালনা যথাসময়ে দেশ,মানুষ ও অর্থনীতি গুরুত্ব দিয়ে বৃহত্তর সার্থ রক্ষায় যুদ্ধের কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ। রাষ্ট্রের নিতীগত সিদ্ধান্তে পরিচালনা পর্ষদে অযোগ্য জনবলে নিশ্চিত হজবরল গড়মিল পরিলক্ষিত হয় যা একটি দেশের জনরোষের কারন। রাষ্ট্রের উন্নত ভবিষ্যত এবং মানুষের মানোন্নয়নে আগামীর স্বর্ন যুগ বিনির্মানে নিশ্চয়ই উপযুক্ত সময়ে যোগ্য সিদ্ধান্ত হওয়া চাই।
পৃথিবীতে পূর্বে বহু মহামারী দেখা দিয়েছে আবার তা মানুষের মহা পরিকল্পনা এবং চেস্টা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। মহামারীতে যেন মহামৃত্যু সাধিত না হয় সে জন্য সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয় সহ আপামর জনসাধারণ পরিস্থিতি সাপেক্ষে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়ে যথাযথ বাস্তবায়ন করা জরুরী।
সরকার চায় পরিমান মাফিক, জনগন চায় আধা, ব্যাবসায়ী শোনে না কোন মানা। করোনাকালিন সময়ে সরকার মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে যে পদ্ধতিতে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা অত্যাবসকীয় প্রয়োজন। সাধারন মানুষের মধ্যে অনেকেই মহামারী বিষয়ে পূর্ব ধারনা বা অভিজ্ঞতা না থাকাটাই স্বাভাবিক। মাঠে ঘাটে খেটে খাওয়া মানুষগুলো গভীর ভাবে এত কিছু চিন্তা করেন না। কিন্তু বয়স্ক, বৃদ্ধ যারা বেচে আছেন তারা অনেকেই ভয়ংকর মহামারী (কলেরা) যে মৃত্যুর মিছিল দেখিয়েছে তা বর্ননা করেন। সাধারণ মানুষ রোগ বালাই কে ভয় করে, কিছুটা সঞ্চিত অর্থ কড়ি চিকিৎসা বা ঔষধে ব্যায় হবে সেটি মোটেই তারা চান না। তবে কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনকারি মানুষগুলো বিক্রি এবং রপ্তানি প্রক্রিয়ায় ঘাটতি হোক সেটি তারা মোটেই মেনে নিতে পারেন না। তাদের ভাষ্য মতে মহামারী অনির্দিস্টকালের, অনিশ্চিত গতিবিধি তাই বলে
মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য সামগ্রি বাজারজাত বন্ধ করা কাম্য নয়। মানুষ রোগে, শোকে,মহামারীতে আক্রান্ত হতে পারে যা প্রকৃতি আমাদের ওপর হয়ত অভিশাপ ধার্য করেছে কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য না পেলে মানুষ হতাস হয়ে আরো বিপদের সম্মুখীন হবে। কৃষক চায় উৎপাদনশীল পন্য সামগ্রি বাজারজাত করতে, খেটে খাওয়া মানুষ চায় কাজ।
এবার আসি ব্যবসায়ীদের কথা নিয়ে। কৃষক তাদের পন্য প্রতিদিন একটি নির্ধারিত সময়ে পাইকারী বা খুচরা বিক্রি করে চলে যায়। বাজারে আড়তদার, স্থানীয় কাঁচামাল দোকানী দিনভর সেসব পন্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রয় করেন। বাজারে মুদি, ক্রকারিজ,সিরামিক, সোনা,কাপড়, ইলেকট্রনিকস দোকান সহ বিভিন্ন বিপনি-বিতান রয়েছে যাদের বেশিরভাগ দোকানী প্রতিদিনের বেচা-কেনার ওপর নির্ভর করেই সংসার চালায়। কেউবা আবার অন্যের ঘর ভাড়া নিয়ে ছোটখাটো ব্যাবসা চালান যেখানে পরিস্থিতি সাপেক্ষে মালিক পক্ষকে ভাড়া মিটাতেই হিমসিম খাচ্ছে। আরেকদল ব্যাবসায়ী আছেন যাদের নিজস্ব দোকান এবং মজুদ কৃত পন্য ঘর আছে তাদের সচ্ছলতা আছে, পারিবারিক দিক থেকে তারা অনেকেই করোনাকালিন সময়ে বিলাসিতাপূর্ন উন্নত জীবন যাপন করে, তাদের চিন্তাভাবনা আরো চাই, আরো চাই। এই শ্রেনীর সাথে আরেকটি শ্রেনীর বড় ব্যাবসায়ী মধ্যোম এবং দূরপাল্লার যানবাহনের মালিক পক্ষ। এখানে আন্তর্জাতিক পন্য সামগ্রি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস এবং বনিকদের চিন্তাভাবনাও উপরোল্লিখিত ব্যাবসায়ীদের মত। এসব ব্যাবসা বা মালিকপক্ষ ভাবেন যে মহামারী যতই প্রকট আকার ধারন করুক তাহাতে তাদের নিজ প্রানের ক্ষতি খুবই কম হবে বলে মনে করেন, কেননা তারা বেশিরভাগই বেতনভুক্ত লোক দিয়ে কাজ করে নেয়। কাজের লোকগুলো একটি নির্দিস্ট স্থানে চার দেয়ালের ভেতর বসে কাজ করে সেখানে জনসমাগম কম থাকে। তাদের এই আত্মকেন্দ্রীক চিন্তাভাবনা নিয়ে করোনা পরিস্থিতি বা সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যব্যাবস্থা উপেক্ষা করে।
এবার করোনা পরিস্থিতিতে আমলাদের ক্রিয়া,প্রতিক্রিয়া। সরকারি চাকুরীজীবীদের অনেকের আবার এই মুহূর্তে দশ আঙ্গুলে ঘি জমেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কেউ কেউ দুই দিকে লাভের বোঝা ভারি করছেন, কেননা প্রতিমাসের বেতন তারা পাইতেছেন সাথে পুরো দেড় বছরে সাংসারিক এবং ছোট খাটো ব্যাবসা বানিজ্যের আয়। তাদের বেলায় করোনা পরিস্থিতিতে সরকার যে সিদ্ধান্তি নিবেন তাহাতে তাদের মাথা ব্যাথার কারন নেই। তবে সরকারের প্রশাসনিক জনবল এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রনালায়ের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা কর্মচারি এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরনের যে চেস্টা বা পরিশ্রম করছেন তা নিতান্তই প্রসংশার দাবি রাখে। একই সাথে দিনরাত কাজ করছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রিন্ট,ইলেকট্রনিকস, অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিকগন। সাংবাদিকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই দেশের মানুষ ঘরে বসেই দেখতে,শুনতে,পড়তে পারছে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা আর প্রতিদিনের করোনা পরিস্থিতি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বুলেটিন এবং বাংলাদেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ে করোনা পরিস্থিতি নিরিখে গন মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষায় সরকার যেসব সিদ্ধান্ত নিবেন তা মেনে চলা প্রতিটি নাগরিকদের জরুরী কর্তব্য। বর্তামন ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে একঘেয়েমি বা নিজ সার্থ রক্ষা করতে দেশকে বৃহত্তর ক্ষতির দিকে ঠেলে দেয়া কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের কাজ নয়। আমি মনে করি দেশ এবং দেশের মানুষকে বাচাতে মহামারী নিয়ন্ত্রণে একটি বৃহত্তর পরিকল্পনাসই যুদ্ধ পরিচালনা করা। এই ভয়ানক করোনা মহামারী চলাকালীন সরকার কোন একক জাতি, গোষ্ঠী, দল,এবং প্রতিষ্টানকে প্রাধান্য দিতে পারে না বা দেয় না। বৃহত্তর জনস্বাস্থ্য এবং দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে একক ব্যক্তি সার্থকে জলাঞ্জলী দিতেই হবে তাতে কার কতটা ক্ষতি সাধিত হয়েছে সেটা মোটেই মূখ্য বিষয় নয় বরং জাতীয় বা দেশের কতটা সুরক্ষা হলো এটাই গন্য বিষয়। কিছু মানুষ এখনও যেভাবে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করছে
আপনার মতামত লিখুন :