দুর্নীতির মামলায় ১০ বছর দণ্ডিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি সেলিম বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আবেদন করেছেন। আবেদনের শুনানি দুপুর ২টায় শুরু হবে।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টার পর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে তিনি এ আবেদন করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার সাইদুল ইসলাম শাহীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় গত ২৫ এপ্রিল সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এরপর তাকে ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশে হাজি সেলিম আজ বিচারিক আদালতে আত্মসমপর্ণ করতে যাচ্ছেন।
গত ২ মে দণ্ড মাথায় নিয়ে হাজি সেলিম থাইল্যান্ড গেলে তা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। পরে ৫ মে দুপুরে দেশে ফিরে আসেন হাজি সেলিম। তখন জানিয়েছিলেন, শিগগিরই আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন তিনি।
আইনে বিকল্প পথ না থাকায় শেষ পর্যন্ত কারাগারে যেতেই হচ্ছে হাজি সেলিমকে।
হাজি সেলিমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাহমুদ বেলাল সাংবাদিকদের জানান, রোববার দুপুর ২টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের ৭নং কোর্টে তিনি আত্মসমর্পণ করতে পারেন।
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর সাজাপ্রাপ্ত হাজি সেলিম ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য পদে থাকার বৈধতা নিয়ে নানা মহলে গুঞ্জন শুরু হয়। প্রশ্ন উঠে, আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর তার সংসদ সদস্য পদ থাকবে কিনা বা তাকে এ পদে রাখা নৈতিক বিবেচনায় কতটা সমর্থনযোগ্য হবে।
সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, একজন সংসদ সদস্য নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে কমপক্ষে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত হলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে। আর ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারা অনুযায়ী তার সাজার রায় স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি সংসদ সদস্য হিসাবে বিবেচিত হবেন না।
হাজি সেলিমের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্ট তাকে আত্মসমর্পণ করতে ৩০ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন। অর্থাৎ দণ্ডিত হলেও নির্ধারিত ৩০ দিন পর তা কার্যকর হবে। তাই এ সময়ে তিনি এক ধরনের জামিন সুবিধায় আছেন। হাইকোর্টের রায় বিচারিক আদালত ২৫ এপ্রিল গ্রহণ করেন। এ হিসাবে ২৫ মে পর্যন্ত তার আত্মসমর্পণ করার সময় আছে। এ মুহূর্তে আইনি বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে এক যুগ আগে বিচারিক আদালতের রায়ে হাজি সেলিমের ১৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। এ আপিলের শুনানি নিয়ে গত বছরের ৯ মার্চ হাইকোর্ট রায় দেন। তাতে তার ১০ বছরের সাজা বহাল রাখা হয়। ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এ আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এর পর হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়সহ নথিপত্র ২৫ এপ্রিল বিচারিক আদালতে পাঠানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :