ঢাকা ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমরা জীবিত বাবা মায়ের কাছে বাংলাদেশে ফিরতে চাই।

হেমায়েত হোসেন খান
  • আপডেট সময় : ০৮:৪১:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪ ২০১ বার পড়া হয়েছে

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"transform":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}

সময়কাল এর সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

লিবিয়ায় বন্দী ২৭ যুবকের দেশে ফেরার আকুতি,১০ কোটি টাকা নিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে দালাল চক্র

মোঃ হেমায়েত হোসেন খান
মাদারীপুর থেকে॥

আমাদের কাছে দেওয়ার মতো আর কিছুই নাই। ধার-দেনা ও ভিটে মাটি বিক্রি করে দালালের দাবী অনুযায়ী আমরা ২৭ জনের বাবদ প্রায় ১০ কোটি টাকা দিয়েছি।

মাফিয়ার দালাল মাদারীপুর সদর উপজেলার মাদ্রা কালাই মারা এলাকার ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আনোয়ার মীরের ছেলে মাফিয়া (১) মফিজ মীর (২) মাফিয়া হোসাইন আহমেদ,(৩) মাফিয়া জাহিদ হোসেন এবং কুমিল্লা জেলার মুরাদ নগর এলাকার বাসিন্দা কালকিনি এলাকার জামাতা (৪) মাফিয়া সাইফুল ইসলাম (ছোটন)

আমাদের টাকা নিয়ে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে য়ায। এখন আমরা লিবিয়ার একটি জেলে আছি।। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি, যত দ্রুত সম্ভব আমাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। আমরা জীবিত বাবা মায়ের কাছে বাংলাদেশে ফিরতে চাই।

দালালের মাধ্যমে ইউরোপে যেতে গিয়ে লিবিয়ার জেলে বন্দী ২৭ যুবক তাদেঁর পরিবারের কাছে পাঠানো একটি ভিডিও বার্তায় তারা এই আবেদন জানান। গতকাল সোমবার পাঠানো ৭ মিনিট ১২ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় লিবিয়া গিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে ২৭ যুবক জেলে বন্দী আছেন বলে বলা হয়।

লিবিয়ার জেলে বন্দী তাঁরা হলেন মাদারীপুর জেলাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা-(১) রানা মাতুব্বর, (২)জুবায়ের, (৩) হালান,(৪)ওমর ফারুক (৫)সজিব(৬) রিদয় ইসলাম(৭)কামরুল প্রিন্স,(৮) শুভ, (৯) নাঈম মোল্লা,(১০) মিলন,(১১)শাওন,(১২) রশময়,(১৩) সাব্বির, (১৪)গাজীপুর জেলার মোঃ ফারুক,(১৫) মোঃ সোহেল,(১৬)শরিয়তপুর জেলার শাহিন, (১৭) হাসান, (১৮) কুড়িগ্রাম জেলার ইয়াকুব, (১৯) বরিশাল জেলার হাসিবুল ইসলাম,(২০)ময়মনসিং জেলার তাহের,(২১) হানিফ,(২২) পাবনা জেলার আমান উল্লাহ, (২৩) গোপালগঞ্জ জেলার গোকুল,(২৪) শ্রী সুবাস ও (২৫) সঞ্জিত।

রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার সিংগারপাড় গ্রামের এহরাম সরদারের ছেলে মফিয়া জাহিদ হোসেন এবং সিলেট জেলার কানাইগাতী উপজেলার কাওরারমাটি গ্রামের আঃ লতিফের ছেলে মাফিয়া মোঃ হোসাইন আহমেদ।

লিবিয়া থেকে ইতালী পাঠানোর (গেইম) দেওয়ার কথা বলে এই ২৭ যুবকের নিকট থেকে জন প্রতি ৩৫ থেকে-৪০ লাখ টাকা করে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদেও লিবিয়া পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। লিবিয়ায় বন্দী ২৭ যবকের পরিবার ধার-দেনা ও ভিটে মাটি বিক্রি করে দালালের দাবী অনুযায়ী টাকা দেয়।

বন্দী ২৭ জন যুবক একটি ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান যত দ্রুত সম্ভব আমাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। আমরা জীবিত দেশে ফিরতে চাই।

লিবিয়ার জেলে বন্দী মাদারীপুরের রানা মাতুব্বরের মা হাসিয়া বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের ভিডিও দেখে আর ঘুমাতে পারছি না। আমি সরকারের কাছে তাদের এনে দেওয়ার আবেদন করছি।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, মাদারীপুর তথা দক্ষিণাঞ্চলে মূলত নেই কোনো কলকারখানা। নেই কর্মসংস্থান। তাই বিদেশ যাওয়ার দিকে ঝুঁকছে মানুষ। অন্য দিকে যারা বিদেশ যাচ্ছে তারা দেশে এসে বহুতল ভবন তৈরি করছে। পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাচ্ছে।

এদের দেখাদেখি লেখাপড়া শেষ না করেই বিদেশ যাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু করে অনেকেই। এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার বলি হচ্ছে শত শত যুবক। তাই তিনি এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা থামাতে স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টির দাবি জানান।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামরুল হাসান বলেন, অনেক ভুক্তভোগী দেশে ফিরে মানবপাচার আইনে মামলা করেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা আপস মিমাংসা করে ফেলে। যার কারণে পার পেয়ে যায় অপরাধীরা। তিনি বলেন, তাঁদের পরিবারের কাছে পাঠানো ভিডিওটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। নিরাপদে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

আমরা জীবিত বাবা মায়ের কাছে বাংলাদেশে ফিরতে চাই।

আপডেট সময় : ০৮:৪১:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪

লিবিয়ায় বন্দী ২৭ যুবকের দেশে ফেরার আকুতি,১০ কোটি টাকা নিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে দালাল চক্র

মোঃ হেমায়েত হোসেন খান
মাদারীপুর থেকে॥

আমাদের কাছে দেওয়ার মতো আর কিছুই নাই। ধার-দেনা ও ভিটে মাটি বিক্রি করে দালালের দাবী অনুযায়ী আমরা ২৭ জনের বাবদ প্রায় ১০ কোটি টাকা দিয়েছি।

মাফিয়ার দালাল মাদারীপুর সদর উপজেলার মাদ্রা কালাই মারা এলাকার ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আনোয়ার মীরের ছেলে মাফিয়া (১) মফিজ মীর (২) মাফিয়া হোসাইন আহমেদ,(৩) মাফিয়া জাহিদ হোসেন এবং কুমিল্লা জেলার মুরাদ নগর এলাকার বাসিন্দা কালকিনি এলাকার জামাতা (৪) মাফিয়া সাইফুল ইসলাম (ছোটন)

আমাদের টাকা নিয়ে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে য়ায। এখন আমরা লিবিয়ার একটি জেলে আছি।। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি, যত দ্রুত সম্ভব আমাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। আমরা জীবিত বাবা মায়ের কাছে বাংলাদেশে ফিরতে চাই।

দালালের মাধ্যমে ইউরোপে যেতে গিয়ে লিবিয়ার জেলে বন্দী ২৭ যুবক তাদেঁর পরিবারের কাছে পাঠানো একটি ভিডিও বার্তায় তারা এই আবেদন জানান। গতকাল সোমবার পাঠানো ৭ মিনিট ১২ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় লিবিয়া গিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে ২৭ যুবক জেলে বন্দী আছেন বলে বলা হয়।

লিবিয়ার জেলে বন্দী তাঁরা হলেন মাদারীপুর জেলাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা-(১) রানা মাতুব্বর, (২)জুবায়ের, (৩) হালান,(৪)ওমর ফারুক (৫)সজিব(৬) রিদয় ইসলাম(৭)কামরুল প্রিন্স,(৮) শুভ, (৯) নাঈম মোল্লা,(১০) মিলন,(১১)শাওন,(১২) রশময়,(১৩) সাব্বির, (১৪)গাজীপুর জেলার মোঃ ফারুক,(১৫) মোঃ সোহেল,(১৬)শরিয়তপুর জেলার শাহিন, (১৭) হাসান, (১৮) কুড়িগ্রাম জেলার ইয়াকুব, (১৯) বরিশাল জেলার হাসিবুল ইসলাম,(২০)ময়মনসিং জেলার তাহের,(২১) হানিফ,(২২) পাবনা জেলার আমান উল্লাহ, (২৩) গোপালগঞ্জ জেলার গোকুল,(২৪) শ্রী সুবাস ও (২৫) সঞ্জিত।

রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার সিংগারপাড় গ্রামের এহরাম সরদারের ছেলে মফিয়া জাহিদ হোসেন এবং সিলেট জেলার কানাইগাতী উপজেলার কাওরারমাটি গ্রামের আঃ লতিফের ছেলে মাফিয়া মোঃ হোসাইন আহমেদ।

লিবিয়া থেকে ইতালী পাঠানোর (গেইম) দেওয়ার কথা বলে এই ২৭ যুবকের নিকট থেকে জন প্রতি ৩৫ থেকে-৪০ লাখ টাকা করে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদেও লিবিয়া পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। লিবিয়ায় বন্দী ২৭ যবকের পরিবার ধার-দেনা ও ভিটে মাটি বিক্রি করে দালালের দাবী অনুযায়ী টাকা দেয়।

বন্দী ২৭ জন যুবক একটি ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান যত দ্রুত সম্ভব আমাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। আমরা জীবিত দেশে ফিরতে চাই।

লিবিয়ার জেলে বন্দী মাদারীপুরের রানা মাতুব্বরের মা হাসিয়া বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের ভিডিও দেখে আর ঘুমাতে পারছি না। আমি সরকারের কাছে তাদের এনে দেওয়ার আবেদন করছি।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, মাদারীপুর তথা দক্ষিণাঞ্চলে মূলত নেই কোনো কলকারখানা। নেই কর্মসংস্থান। তাই বিদেশ যাওয়ার দিকে ঝুঁকছে মানুষ। অন্য দিকে যারা বিদেশ যাচ্ছে তারা দেশে এসে বহুতল ভবন তৈরি করছে। পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাচ্ছে।

এদের দেখাদেখি লেখাপড়া শেষ না করেই বিদেশ যাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু করে অনেকেই। এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার বলি হচ্ছে শত শত যুবক। তাই তিনি এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা থামাতে স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টির দাবি জানান।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামরুল হাসান বলেন, অনেক ভুক্তভোগী দেশে ফিরে মানবপাচার আইনে মামলা করেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা আপস মিমাংসা করে ফেলে। যার কারণে পার পেয়ে যায় অপরাধীরা। তিনি বলেন, তাঁদের পরিবারের কাছে পাঠানো ভিডিওটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। নিরাপদে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।