ঢাকা ০৪:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩৫ বছরেও হয়নি রাস্তা সংস্কার, কাজে লাগেছে না ২০ লাখ টাকার ব্রিজ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি.
  • আপডেট সময় : ০৯:১৩:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৫ বার পড়া হয়েছে
সময়কাল এর সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

৩৫ বছরেও হয়নি রাস্তা সংস্কার, পূর্ণাঙ্গ রাস্তা না থাকাতে ২০লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা ব্রিজটি কোনো কাজেই লাগছে না। কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়নের খরশিলা- রোয়াইয়াল রাস্তার এই ব্রিজটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছিল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালভার্ট কর্মসূচী ২০১৮-২০১৯’র আওতায় উপজেলার বালিয়াটা থেকে  রোয়াইল হয়ে ছাতিহাটী রাস্তার পাইকড়া ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ হোসেনের বাড়ি সংলগ্ন পশ্চিম পার্শ্বের রাস্তায় ২৪ ফুট দীর্ঘ ও ১৪ ফুট উঁচু এই ব্রিজটি নির্মাণ করেছিল স্থানীয় ঠিকাদার কাজি ট্রেডার্স।

 দুর্ভোগে পড়া সেখানকার জনসাধারণ তাদের সীমাহীন কষ্টের কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, ২০১৯ সালে এই ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ব্রিজটির দুই পার্শ্বের মাটি না ফেলায় এই ব্রিজটি  তাদের কোনো কাজেই আসে নাই। ৫ বছরও ব্যবহারের অনুপযোগী  ফলে খরশিলা এবং রোয়াইল গ্রামের হাজারো মানুষ মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে।

সরকারের একটি বিরাট অংকের টাকা খরচ করে নির্মিত ব্রিজটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। তারা বলেন, কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবেই ব্রিজটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। 

তারা বলেন, রোয়াইল এবং খরশিলা দুই গ্রামে ১হাজার ৫শত পরিবারের বস বাস। এই দুটি গ্রামের বেশীর ভাগ মানুষ কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। ব্রিজ  থাকার সত্বেও উৎপাদিত ফসল রাস্তা মেরামত না করায় ব্রিজ কাজে লাগছে না। তারা ব্রিজ দিয়ে আবাদি ফসল সুবিধা মত পারাপার করতে পারেছে না।

জানা যায়, ওই দুই গ্রামে দুটি স্কুল এবং দুই গ্রামের পাশে দুটি  হাট-বাজার রয়েছে 

জেলা সদরে এবং  উপজেলায় যাতায়াতের সহজ রাস্তা  হচ্ছে এই দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রোয়াইল-খরশিলা কাঁচা রাস্তাটি। দুই কিলোমিটার রাস্তার জন্য ৪-৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। এই রাস্তার ওপর পাকা ব্রিজটি নির্মাণে এলাকাবাসী খুব খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু ঠিকাদার কোনো রকমে ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ করলেও ব্রিজের দুই প্রান্তে মাটি না ফেলায় তারা এই ব্রিজের ওপর দিয়ে এলাকার জনসাধারণ  যাতায়াত করতে পারছে না।

এলাকাবাসীর  অভিযোগ, স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি এ ব্যাপারে কোনো ভূমিকা পালন করেননি।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তিরা জানান, ফসলের মাঠ অনেক দূরে হওয়াতে ফসল বাড়িতে নেওয়া অনেক কষ্ট হচ্ছে।  রাস্তাটা ভালো হলে আমাদের এই চকের আবাদির জমির ফসল ভ্যান বা যানবাহনের মাধ্যমে অতি সহজে বাড়ি নেওয়া যাবে কষ্ট কমে যাবে। 

পাইকড়া ইউনিয়ন ৬নং ইউপি সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ১৯৮৯ সালে এই রাস্তায় প্রথম মাটির রাস্তা করে দেয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম হরমুজ আলী বিএসসি তারপর আর কোন নেতার ধারায় এই রাস্তাটি সংস্কার হইনি। সাবেক এমপি হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী তখন করলে করতে পারতেন রাস্তার দুই পাশে তাদের জমি বেশি। তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ছোট প্রকল্প দিয়ে রাস্তা সংস্কার করা সম্ভব নয়। এটা এমপি কোঠার প্রকল্পে দিলে কাজ করা সম্ভব। 

পাইকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম জানান, সর্বপরি আমাদের রাস্তার প্রয়োজন। রাস্তা হলে আশ- পাশের গ্রামের মানুষের অনেক উপকার হবে। 

পাইকড়া  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন বলেন, ব্রিজটির ব্যাপারে তিনি সবসময় সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করেছেন। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। বর্তমান এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে  মাটির কাজ করার চেষ্টা করতেছি। মাটির কাজ শেষ হলে রাস্তাটি পাকা করার ব্যবস্থা করতে পারি। তিনি আরোও জানান,এই রাস্তাটি পরিপূর্ণ হয়ে গেলে বর্ষার সময় রাস্তার দুই পাশে নিউ আশুলিয়া পরিণত হবে, আশে-পাশের লোকজনের বিনোদন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠবে। এলাকার কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হব।  

ব্রিজটির ঠিকাদার কাজি ট্রেডার্স। স্বত্বাধিকারী কাজি জহির সুমন। এই ঠিকাদারের সাথে কোন মাধ্যমে  যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সেহাব উদ্দিন  বলেন, আমি কালিহাতীতে যোগদান করার আগেই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছিল। তবে সাবেক এমপি হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারীর নিজ গ্রাম তখন সে করে নেয়নি। বর্তমান এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে চেয়ারম্যান আজাদ হোসেনকে দিয়ে  রাস্তার কাজ করিয়ে দিব।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

৩৫ বছরেও হয়নি রাস্তা সংস্কার, কাজে লাগেছে না ২০ লাখ টাকার ব্রিজ

আপডেট সময় : ০৯:১৩:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪

৩৫ বছরেও হয়নি রাস্তা সংস্কার, পূর্ণাঙ্গ রাস্তা না থাকাতে ২০লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা ব্রিজটি কোনো কাজেই লাগছে না। কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়নের খরশিলা- রোয়াইয়াল রাস্তার এই ব্রিজটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছিল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালভার্ট কর্মসূচী ২০১৮-২০১৯’র আওতায় উপজেলার বালিয়াটা থেকে  রোয়াইল হয়ে ছাতিহাটী রাস্তার পাইকড়া ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ হোসেনের বাড়ি সংলগ্ন পশ্চিম পার্শ্বের রাস্তায় ২৪ ফুট দীর্ঘ ও ১৪ ফুট উঁচু এই ব্রিজটি নির্মাণ করেছিল স্থানীয় ঠিকাদার কাজি ট্রেডার্স।

 দুর্ভোগে পড়া সেখানকার জনসাধারণ তাদের সীমাহীন কষ্টের কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, ২০১৯ সালে এই ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ব্রিজটির দুই পার্শ্বের মাটি না ফেলায় এই ব্রিজটি  তাদের কোনো কাজেই আসে নাই। ৫ বছরও ব্যবহারের অনুপযোগী  ফলে খরশিলা এবং রোয়াইল গ্রামের হাজারো মানুষ মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে।

সরকারের একটি বিরাট অংকের টাকা খরচ করে নির্মিত ব্রিজটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। তারা বলেন, কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবেই ব্রিজটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। 

তারা বলেন, রোয়াইল এবং খরশিলা দুই গ্রামে ১হাজার ৫শত পরিবারের বস বাস। এই দুটি গ্রামের বেশীর ভাগ মানুষ কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। ব্রিজ  থাকার সত্বেও উৎপাদিত ফসল রাস্তা মেরামত না করায় ব্রিজ কাজে লাগছে না। তারা ব্রিজ দিয়ে আবাদি ফসল সুবিধা মত পারাপার করতে পারেছে না।

জানা যায়, ওই দুই গ্রামে দুটি স্কুল এবং দুই গ্রামের পাশে দুটি  হাট-বাজার রয়েছে 

জেলা সদরে এবং  উপজেলায় যাতায়াতের সহজ রাস্তা  হচ্ছে এই দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রোয়াইল-খরশিলা কাঁচা রাস্তাটি। দুই কিলোমিটার রাস্তার জন্য ৪-৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। এই রাস্তার ওপর পাকা ব্রিজটি নির্মাণে এলাকাবাসী খুব খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু ঠিকাদার কোনো রকমে ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ করলেও ব্রিজের দুই প্রান্তে মাটি না ফেলায় তারা এই ব্রিজের ওপর দিয়ে এলাকার জনসাধারণ  যাতায়াত করতে পারছে না।

এলাকাবাসীর  অভিযোগ, স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি এ ব্যাপারে কোনো ভূমিকা পালন করেননি।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তিরা জানান, ফসলের মাঠ অনেক দূরে হওয়াতে ফসল বাড়িতে নেওয়া অনেক কষ্ট হচ্ছে।  রাস্তাটা ভালো হলে আমাদের এই চকের আবাদির জমির ফসল ভ্যান বা যানবাহনের মাধ্যমে অতি সহজে বাড়ি নেওয়া যাবে কষ্ট কমে যাবে। 

পাইকড়া ইউনিয়ন ৬নং ইউপি সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ১৯৮৯ সালে এই রাস্তায় প্রথম মাটির রাস্তা করে দেয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম হরমুজ আলী বিএসসি তারপর আর কোন নেতার ধারায় এই রাস্তাটি সংস্কার হইনি। সাবেক এমপি হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী তখন করলে করতে পারতেন রাস্তার দুই পাশে তাদের জমি বেশি। তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ছোট প্রকল্প দিয়ে রাস্তা সংস্কার করা সম্ভব নয়। এটা এমপি কোঠার প্রকল্পে দিলে কাজ করা সম্ভব। 

পাইকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম জানান, সর্বপরি আমাদের রাস্তার প্রয়োজন। রাস্তা হলে আশ- পাশের গ্রামের মানুষের অনেক উপকার হবে। 

পাইকড়া  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন বলেন, ব্রিজটির ব্যাপারে তিনি সবসময় সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করেছেন। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। বর্তমান এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে  মাটির কাজ করার চেষ্টা করতেছি। মাটির কাজ শেষ হলে রাস্তাটি পাকা করার ব্যবস্থা করতে পারি। তিনি আরোও জানান,এই রাস্তাটি পরিপূর্ণ হয়ে গেলে বর্ষার সময় রাস্তার দুই পাশে নিউ আশুলিয়া পরিণত হবে, আশে-পাশের লোকজনের বিনোদন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠবে। এলাকার কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হব।  

ব্রিজটির ঠিকাদার কাজি ট্রেডার্স। স্বত্বাধিকারী কাজি জহির সুমন। এই ঠিকাদারের সাথে কোন মাধ্যমে  যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সেহাব উদ্দিন  বলেন, আমি কালিহাতীতে যোগদান করার আগেই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছিল। তবে সাবেক এমপি হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারীর নিজ গ্রাম তখন সে করে নেয়নি। বর্তমান এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে চেয়ারম্যান আজাদ হোসেনকে দিয়ে  রাস্তার কাজ করিয়ে দিব।