ঢাকা ০৬:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় প্রতিবন্ধী নারী ও মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড

নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় : ০৪:১০:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৩ ১০৯ বার পড়া হয়েছে
সময়কাল এর সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নওগাঁয় মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী ও মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে দুই জনের যাবজ্জীবন দিয়েছে আদালত।

সোমবার (২৮ আগস্ট) সকল ১১ টায় নওগাঁর নারী ও শিশু দমন ট্রাইবু্যনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার সোমবার এ রায় দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত বিশেষ কৌশলী মোঃ মকবুল হোসেন জানান, নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার কাশিপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী নারী ২০২০ সালের ২৭ মার্চ বেলা আড়াইটার সময় তার বাড়ির পিছনে শুকনো পাতা ঝাড়ু দিতে গেলে একই গ্রামের উক্ত আসামী পিছন দিক থেকে জাপটে ধরে মুখে গামছা ভরে দিয়ে তার শয়ন ঘরে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এই অভিযোগে প্রতিবন্ধী নারীর স্বামী ২০২০ সালের ১লা এপ্রিল পত্নীতলা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। আদালতে আসামী ঘটনার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। অবশেষে আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০২২ সালে ৮ জুন মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহন শুরু হয়ে চলতি বছরের ৩ আগস্ট দশ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন সমাপ্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শ্রবন করা হয়। এরপর আজ রায় ঘোষণার জন্য ধার্য্য হলে আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার প্রকাশ্যে আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করার আদেশ প্রদান করেন। আসামী পূর্ব থেকেই হাজতে থাকায় তাকে সাজা পরোয়ানা পড়ে শুনানো হয়। আসামী পক্ষে এ্যাডভোকেট সোমেন্দ্র নাথ কুন্ডু মামলা পরিচালনা করেন। জরিমানার অর্থ ধর্ষণের শিকার নারীকে প্রদানের নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।

অপর মামলাটি ২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারি উক্ত এলাকার মাদ্রাসা ছাত্রী আসমা খাতুন (ছদ্মনাম) নানীর বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে কাশিতাড়া এলাকার জনৈক হারুন শাহের আমবাগানে নিয়ে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন ছাত্রীর নানাকে খবর দিলে তিনি এসে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করান। পোরশা থানায় ছাত্রীর নানা অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে পোরশা থানার গোবরাকুড়ি এলাকার মোঃ ওসমানের পুত্র হ্যাপির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতে চলতি মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত এগারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ যুক্তিতর্ক শ্রবনের জন্য ধার্য্য থাকলে আসামী পলাতক থাকায় নিয়ম অনুযায়ী তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবী এস.এম সারোয়ার হোসেন। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে জনাকীর্ণ আদালতে আজ সকালে পলাতক আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করার রায় ঘোষণা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার। রায় ঘোষণার সময় আসামী পলাতক থাকার সাজা পরোয়ানাসহ তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন আদালতের বিচারক। জরিমানার টাকা ধর্ষণের শিকার নারীকে দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

নওগাঁয় প্রতিবন্ধী নারী ও মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড

আপডেট সময় : ০৪:১০:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৩

নওগাঁয় মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী ও মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে দুই জনের যাবজ্জীবন দিয়েছে আদালত।

সোমবার (২৮ আগস্ট) সকল ১১ টায় নওগাঁর নারী ও শিশু দমন ট্রাইবু্যনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার সোমবার এ রায় দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত বিশেষ কৌশলী মোঃ মকবুল হোসেন জানান, নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার কাশিপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী নারী ২০২০ সালের ২৭ মার্চ বেলা আড়াইটার সময় তার বাড়ির পিছনে শুকনো পাতা ঝাড়ু দিতে গেলে একই গ্রামের উক্ত আসামী পিছন দিক থেকে জাপটে ধরে মুখে গামছা ভরে দিয়ে তার শয়ন ঘরে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এই অভিযোগে প্রতিবন্ধী নারীর স্বামী ২০২০ সালের ১লা এপ্রিল পত্নীতলা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। আদালতে আসামী ঘটনার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। অবশেষে আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০২২ সালে ৮ জুন মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহন শুরু হয়ে চলতি বছরের ৩ আগস্ট দশ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন সমাপ্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শ্রবন করা হয়। এরপর আজ রায় ঘোষণার জন্য ধার্য্য হলে আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার প্রকাশ্যে আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করার আদেশ প্রদান করেন। আসামী পূর্ব থেকেই হাজতে থাকায় তাকে সাজা পরোয়ানা পড়ে শুনানো হয়। আসামী পক্ষে এ্যাডভোকেট সোমেন্দ্র নাথ কুন্ডু মামলা পরিচালনা করেন। জরিমানার অর্থ ধর্ষণের শিকার নারীকে প্রদানের নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।

অপর মামলাটি ২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারি উক্ত এলাকার মাদ্রাসা ছাত্রী আসমা খাতুন (ছদ্মনাম) নানীর বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে কাশিতাড়া এলাকার জনৈক হারুন শাহের আমবাগানে নিয়ে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন ছাত্রীর নানাকে খবর দিলে তিনি এসে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করান। পোরশা থানায় ছাত্রীর নানা অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে পোরশা থানার গোবরাকুড়ি এলাকার মোঃ ওসমানের পুত্র হ্যাপির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতে চলতি মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত এগারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ যুক্তিতর্ক শ্রবনের জন্য ধার্য্য থাকলে আসামী পলাতক থাকায় নিয়ম অনুযায়ী তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবী এস.এম সারোয়ার হোসেন। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে জনাকীর্ণ আদালতে আজ সকালে পলাতক আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করার রায় ঘোষণা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার। রায় ঘোষণার সময় আসামী পলাতক থাকার সাজা পরোয়ানাসহ তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন আদালতের বিচারক। জরিমানার টাকা ধর্ষণের শিকার নারীকে দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।